সুস্বাস্থ্যের অধিকারি হতে সকাল বেলায় জরুরি ৬টি সুঅভ্যাস | 6 good morning habits for good health |Health tips|

সুস্বাস্থ্যের অধিকারি হতে সকাল বেলায় জরুরি ৬টি সুঅভ্যাস:

সুস্বাস্থ্যের অধিকারি হতে সকাল বেলায় জরুরি ৬টি সুঅভ্যাস


সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সকাল বেলায় জরুরি ৬টি সুঅভ্যাস নিয়ে আজকে আলোচনা করব।আচ্ছা বলুন তো একটি সুন্দর জীবন কে না চায়?আর এই সুন্দর জীবনের মূল চাবিকাঠি হলো সুস্বাস্থ্য।সুস্বাস্থ্য পেতে হলে যা দরকার তা হলো- ছন্দেবাঁধা জীবন, পরিমিত আহার গ্রহণ করা এবং নিয়ম মেনে চলা। কিন্তু এই দৌড়ঝাঁপের জীবনে নিজের প্রতি এত খেয়াল রাখার সময় কোথায়?তবে, নিজের সামান্য একটু যত্ন, কিছু সুঅভ্যাস আপনাকে রাখতে পারে সুস্থ ও নীরোগ।যাই হোক, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর নিজের পেছনে সামান্য কিছু সময় ব্যয় করে এবং কিছু কাজ নিয়মিত করলেই আপনি হতে পারেন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।নিজেকে সুস্বাস্থ্য রাখার জন্য নিচের অভ্যাস গুলো মেনে চলুন:

1.খালি পেটে পানি পান করুন:

খালি পেটে পানি পান করুন


সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে পানি পান করুন। এতে আপনার শরীরের মেটাবলিজম ত্বরান্বিত হবে এবং ওজন বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা কমে যাবে। সম্ভব হলে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ২ চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। এতে আপনার পেটের যাবতীয় সমস্যা দূর হয়ে যাবে। পেট পরিষ্কার থাকবে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।

2.দাঁত পরিষ্কার করুন:


দাঁত পরিষ্কার করুন

আমরা প্রায় সকলেই ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করার আগে দাঁত ব্রাশ করি। আসলে সকালে দাঁত ব্রাশ করার নিয়ম হলো নাস্তার পর দাঁত ব্রাশ করা। যদি আপনি রাতে দাঁত ব্রাশ করে ঘুমান, তাহলে নাস্তা করার আগে শুধু কুলি করে নিন। এরপর নাস্তা করার পর দাঁত ভালো করে ব্রাশ করে পরিষ্কার করুন। এতে আপনার মুখ ও দাঁত সারাদিনের জন্য পরিষ্কার থাকবে এবং নিঃশ্বাসেও খুব বেশি দুর্গন্ধ থাকবে না।

3.ব্যায়াম করুন:

ব্যায়াম করুন


নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে করবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার পর নিয়মিত ব্যায়াম করুন।অল্প সময়ের ব্যায়ামেই আপনি পাবেন দীর্ঘমেয়াদী ফল।আপনি সারা দিনের জন্য থাকবেন ঝরঝরে এবং কর্মক্ষম। জোরে হাঁটা বা দৌড়ানো খুব ভালো ব্যায়াম। ঘুম থেকে ওঠার পর প্রতিদিন 30 থেকে 40 মিনিট হাঁটতে পারেন। এছাড়া হালকা কোনো ব্যায়ামও করতে পারেন।

4.শবাসন করুন :

শবাসন করুন


আমাদের উপমহাদেশে উদ্ভাবিত যোগ ব্যায়াম আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত, অথচ আমরা অনেকে এ বিষয়ে একবারেই অজ্ঞ। এ ব্যায়ামের মূল বৈশিষ্ট্য হলো বিশেষ ধরনের দেহভঙ্গিমা, যাকে আসন বলা হয়। একেক আসনে দেহে একেকভাবে চাপ পড়ে, যা দেহের একেক অংশের উপকার সাধন। এসব আসনে কিছুক্ষণ থাকার পর একটি বিশেষ আসনে বিশ্রাম নিতে হয় যাকে শবাসন বলে। মনকে চিন্তামুক্ত রেখে বালিশ ছাড়া চিত হয়ে হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে শবাসন করতে হয়। সকালে ঘুম ভাঙলে লাফিয়ে বিছানা থেকে না উঠে কিছুক্ষণ শবাসন করুন। এতে দৈহিক শক্তি ও আত্মবিশ্বাস বাড়ে। প্রতিদিন আধাঘণ্টা শবাসন করলে মেরুদণ্ড ভালো থাকে, অনেক পরিশ্রম ও মানসিক চাপ সহ্য করা যায় এবং দেহের যেকোনো ব্যথা ও লুকানো সমস্যা দূর হয়।

5.সকালে ভরপেট নাস্তা করুন :

পেট ভরে আহার করুন


অনেকেই মোটা হয়ে যাবার ভয়ে সকালে ঠিকমতো নাস্তা করেন না। এটা আসলে একটা ভুল ধারণা। বরং সকালে নাস্তা না করলেই ওজন বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সকালে ভরপেট নাস্তা করুন। এতে আপনার সারাদিনের কর্মক্ষমতা ঠিক থাকবে। দুপুরে ও রাতে অল্প পরিমাণে খেলেও সমস্যা হবে না। সকালের খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখুন।চলুন জেনে নেওয়া যাক পুষ্টিসমৃদ্ধ কিছু সকালের নাস্তা সম্পর্কে।

i.ডিম ও কলা

ডিম ও কলা


প্রোটিনের সবচেয়ে ভালো উৎস হচ্ছে ডিম। তাই সকালের নাস্তায় ডিম খেতে পারেন। ডিমের সঙ্গে কলা রাখতে পারেন। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেলস থাকে। কলায় রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬। সুস্থ থাকতে সকালের নাস্তায় ডিম ও কলা রাখা ভালো।

ii.আটার রুটি

আটার রুটি


আমাদের মধ্যে অনেকেই নাস্তায় আটার রুটি খেতে পছন্দ করেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। আটার রুটিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার জাতীয় উপাদান। নিয়মিত রুটি খেলে রক্তচাপ, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এটি রক্তের শর্করা ঠিক রাখে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করে, দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। 

iii.ওটস

ওটস


ওটস একটি শস্যজাতীয় খাবার। সারা দিনের এনার্জি পেতে সকালের নাস্তায় ওটস খেতে পারেন। ওটসে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার, ম্যাংগানিজ, কপার, ফসফরাস, আয়রন, জিঙ্ক, ফলেট, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন বি১ এবং ভিটামিন বি৬। ওটস ওজন কমাতে সাহায্য করে। ওটস একটি পুষ্টিকর খাদ্য, যা খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায়।

iv.খিচুড়ি

খিচুড়ি


খিচুড়ি নাস্তা হিসেবে চমৎকার। খিচুড়ি শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়, খিচুড়িতে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণও। খিচুড়িতে ব্যবহৃত মসুর ডাল রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। খিচুড়ির মধ্যে থাকা পুষ্টিকর উপাদান আপনার শক্তির মাত্রাকে আরো দ্বিগুণ বাড়িয়ে তোলে। এটি তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায়। 

 v.কাঠবাদাম

কাঠবাদাম


ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর কাঠবাদাম। পানিতে ভেজালে এর পুষ্টিগুণ অনেক বেড়ে যায়। সকালের নাশতায় কাঠবাদাম খাওয়া ভীষণ উপকারী। এটি হজমশক্তি বাড়ায় ও ওজন কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কাঠবাদাম খেলে পুষ্টির পাশাপাশি রুচি বাড়ে। কাঠবাদাম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

vi.গ্রিন টি

গ্রিন টি


এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি , বি৫, ডি, ই, সি, ই। এ ছাড়া আছে সেলেনিয়াম, ক্রোমিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ ও সামান্য ক্যাফেইন, যা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গ্রিন টি ওজন কমাতে সাহায্য করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে। তাই সকালের নাশতায় গ্রিন টি পান করা উচিত।


6.চা  বা কফি নাস্তার পরে পান করুন :

চা  বা কফি নাস্তার পরে পান করুন


সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকেই খালি পেটে চা বা কফি পান করেন।সকালে খালি পেটে চা বা কফি পান করা উচিত নয় এটা খুবই খারাপ একটা অভ্যাস। এতে বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিশেষ করে ক্রনিক অ্যাসিডিটি বা আলসারের সূত্রপাত এভাবেই হয়। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্যেও এ অভ্যাস দায়ী। তাই সকালে নাস্ততা করার পর চা বা কফি পান করুন।


আশা করি এই সব অভ্যাস গুলো নিয়মিত মেনে চললে আপনি হবেন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

related keyword: 
  1. সুস্বাস্থ্যের অধিকারি হতে সকালে ৬টি অভ্যাস।
  2. সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার উপায় কিভাবে।
  3. সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু হওয়ার উপায়।

Post a Comment

Previous Post Next Post